মা
আহমেদ ফিরোজ
এখনো তোমার মোটা কাপড়ের আঁচল ছাড়িনি
দুধের বাটি লুকিয়ে রেখেছি ঠোঁটে
স্নানের জন্য বকুনি এখনো পিঠে হাত বুলোয়
সেন্ডেলজোড়া লুকিয়ে রেখে খালি পায়ে আর মাঠে যাওয়া হয় না
পায়ের তালুতে কাটা বিঁধেছে, না
সন্ধ্যা করে ঘরে ফেরা রোজ রোজ
তোমার দেখা হয় না, শাসনের টান ভুলে যাচ্ছি যেন
কাঁচা আমের বোটার কষে খালি গায়ে আর দাগ লাগে না
মনের দাগ কিছু মুছে ফেলি, আয়নায় মুখ দেখি
অচেনা নয়, তবু কতটুকু তারে আমি চিনি!
এখনো তোমার সোনা ডাক ভুলে যাইনি
এখনো তোমার স্মৃতি মন থেকে হারাইনি।
গ্রামকে দেখি, গ্রামের মানুষ দেখি, মানুষের মুখ দেখি
তোমাকেই দেখি, নদীকূলে ছলাৎ ছলাৎ শব্দ ভেঙে জেগে উঠি
হাটের হাজারো মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যাই না
শহরের চোখেমুখে ধূলোবালি ধোয়া আবর্জনা-গন্ধ লেগে আছে
তোমার ছবিতে কাউকে হাত দিতে দেই না, পরম যত্নে তুলে রাখি
আজকাল নদীদূষণ তোমার দিকে ধেয়ে যাচ্ছে দেখে আঁতকে উঠি, ভয় পাই
বন কেটে, গাছ কেটে বাড়িঘর উঠছে, তোমাকে কেউ ছোঁবে না
দেশকে কেউ ছুঁয়ে দেখে না, মারার যন্ত্র আবিষ্কার করে রাষ্ট্র-সরকার
যে দেশে প্রতি দিন ও রাত পাহাড় কাটা হয়, টিলা ভেঙে ফেলা হয়
সে দেশে তোমাকে পেয়েছি, বুকের মধ্যিখানে লুকিয়ে রেখেছি, প্রেমে-মমতায়…
দেখ, কেউ কখনো তোমাকে হারাতে পারবে না…